`আমি কুল হারা কলঙ্কিনী আমারে কেউ ছোইয়ো না গো সজনী’ (ভিডিওসহ)
`আমি কুল হারা কলঙ্কিনী আমারে কেউ ছোইয়ো না গো সজনী’ (ভিডিওসহ)
sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা :
`আমি কুল হারা কলঙ্কিনী আমারে কেউ ছোইয়ো না গো সজনী’এ রকম শত শত হৃদয় ছোয়া গানের লেখক সুরকার বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০১তম জন্মদিন আজ। এ উপলক্ষে শাহ আব্দুল করিম শাহ আব্দুল করিমের গ্রামের বাড়ী উজানধলে বিকেলে শাহ আব্দুল করিমের মাজারে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। শাহ আব্দুল করিমের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন করিম ভক্তরা। এদিন দিরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী ধলের মেলা হওয়ায় করিম ভক্তরা মেলায় করিমগীতির আসর বসাবে। এতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত করিম ভক্তরা অংশ গ্রহণ করবেন।
ভাটির জনপদ সুনাসমগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ধল আশ্রম গ্রামে ১৯১৬ ইংরেজীর ১৫ ফেব্র“য়ারী শাহ আব্দুল করিম জন্ম গ্রহণ করেন। শাহ আব্দুল করিমের জন্মের সময় তখনকার সমাজ, পরিবেশ, পরিস্থিতি ইংরেজদের আনুকূল্যে বেড়ে উটেছেন। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন মারা যান মখন শাহ আব্দুল করিমের বয়স ২৫। সে সময়টায় বেচে ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। শাহ আব্দুল করিম বেড়ে ওঠার সময় লোক সাহিত্যের একটি উজ্জল পরিবেশ ছিল।
শাহ আব্দুল করিম ৫৪’র নির্বাচন ৬৯, এর গণ আন্দোলন, ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি পর্যায়ে স্বরচিত গনসঙ্গীত পরিবেশন করে জনতাকে দেশ মার্তৃকার টানে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছেন। তাঁর গণসঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে মাওলানা আব্দুল হামিদ থান ভাসানী তাঁর পিটে হাত রেখে বলেছিলেন-বেটা, গানের একাগ্রতা ছাড়িও না, তুমি একদিন গণ মানুষের শিল্পী হবে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গণসঙ্গীত শুনে একশ পচাশি টাকা দেন, শেখ মুজিব ১১ টাকা দিয়ে বলেন, তোমার মতো শিল্পীকে উপযুক্ত মর্যাদা দেয়া হবে।
শাহ আব্দুল করিমের গানের বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় আফতাব সঙ্গীত, ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয় গফঙ্গীত, ১৯৮১ সালে কালনীপ ঢেউ, ১৯৯০ সালে ধলমেলা, ১৯৯৮ সালে ভাটির চিঠি, ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় শাহ আব্দুল করিম রচনা সমগ্র।
শাহ আব্দুল করিম আমৃত্যু মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তার গানের প্রতিটি লাইনে সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে। মানুষের কল্যানই ছিল তার জীবনের ব্রত। মানুষের কথা বলার জন্য রাখাল বালক থেকে তিনি বাউল সম্রাটে পরিণত হয়েছিলেন। শাহ আব্দুল করিমের এ অমর কৃর্তির জন্য থাকে ১৯৯৫ সালে সিলেট রোটারী ক্লাব সম্মাননা দেয়। এর পর আর তাকে পিচনে পিরে থাকতে হয়নি। এক এক করে পদক আর সম্মাননা তার ঝুড়িতে জমা হতে থাকে তিনি প্রায় শতাধিক পদকে ভূষিত হযেছেন। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ২০০১ সাল বালাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন। ২০০৪ সালে মেরিল প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা দেয়া হয় এ বাউল সম্রাটকে।