স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে কার্যালয় থেকে এক কর্মচারিকে আটক করার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের সাথে কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মচারিদের বাকবিতন্ডা ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় অভিযুক্ত কর্মচারী ভয়ে স্ট্রোক করেন। তার নাম- আজিজুর রহমান। এর কিছুক্ষন আগে কর্মচারীদের সাথে হাতহাতিকালে দুদকের কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর কপালে আঘাত লেগে ফেটে গেছে। তাদের দু’জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যবসা-বানিজ্য শাখা থেকে অফিস সহকারি আজিজুর রহমানকে আটক করে দুদক। তবে বাইরে নিয়ে আসার সময় অন্যান্য কর্মচারিদের সাথে দুদকের বাকবিতন্ডা শুরু হলে এক পর্যায়ে আজিজুর রহমানকে ছিনিয়ে নেন কর্মচারিরা। এ সময় তারা জেলা প্রশাসকের অনুমতিসাপেক্ষে আটকের দাবি জানান। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুদক কর্তৃপক্ষের সাথে জেলা প্রশাসনের ও কর্মচারিদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। এদিকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে দুদকের অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে দুদকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় কর্মচারিরা। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বৈঠক চলাকালে অফিস সহকারী আজিজুর রহমান (৫০) অসুস্থ হয়ে জেলা প্রশাসকের রুমে সবার সামনে মাটিতে পড়ে যান। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনসহ কর্মকর্তারা স্ট্রোক করেছে এ কথা বলে আজিজুর রহমানকে গাড়ীযোগে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার সময় জেলা প্রশাসকের প্রধান গেইট ও নিচের গেইট বন্ধ করে দেয় কর্মচারীরা।
এদিকে, এ ঘটনায় দুদক কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আহমদও আহত হয়েছেন। কর্মচারীদের সাথে হাতহাতিকালে তার কপালে আঘাত লেগে ফেটে গেছে। তাকেও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় ডিসি অফিসে কর্মচারীদের তোপের মুখে রয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। আর ডিসি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে আন্দোলন করছেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেট অফিসের ৫ কর্মকর্তা ও ৪ জন পুলিশ সদস্য বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অফিস সহকারি আজিজুর রহমানকে আটক করতে যান। তাদের কাছে তথ্য ছিল ওই কর্মচারীর কাছে ঘুষের টাকা রয়েছে। তারা ৩০৭ নাম্বার রুম থেকে তাকে আটক করে নিচে নামার সময় ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেন। এসময় দুদক কর্মকর্তা ও পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডাতে জড়িয়ে পড়েন কর্মচারীরা। এখন ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশী প্রহরায় ডিসির কার্যালয় ছাড়লেন দুদক কর্মকর্তারা
জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে অবশেষে পুলিশের সহায়তায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় ত্যাগ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেটের কর্মকর্তারা। কর্মচারিদের তীব্র বাধার ও হামলার মুখে বৈঠকে বিকেল ৫টা থেকে বৈঠক শেষে দুদক কর্মকর্তারা সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন। ওই কর্মচারিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে কোতয়ালী থানায় গিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা বলে জানা গেছে। এ সময় দুদক সিলেটের ডেপুডি ডিরেক্টর রেভা হালদার উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযান ও বৈঠকের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোন কিছু জানাননি দুদকের কর্মকর্তারা।