• ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা শুনলেন মুফতি হান্নান

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: আপিল বিভাগের চূড়ান্ত বিচারেও ফাঁসির রায় পাওয়া হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানকে কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে। সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া এই আসামি ইতোমধ্যে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ গত ৭ ডিসেম্বর এই মামলায় হান্নানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে। আপিল বিভাগের রায় হাই কোর্ট হয়ে নিম্ন আদালতে যাওয়ার পর বিচারিক আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে এবং তা গত শুক্রবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির সেলে থাকা হান্নানকে গত শুক্রবার সকালে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় বলে সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান।
মুফতি হান্নান আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। তাতে রায় না বদলালে ফাঁসির দড়ি এড়াতে তার সামনে কেবল দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ থাকবে।
তিনি সেই সুযোগ না নিলে অথবা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে কারাবিধি অনুযায়ী এই জঙ্গিনেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে সরকার।

মামলা বৃত্তান্ত
সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন।
এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে।
আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।
পুলিশ ওইদিনই সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
যথাযথ ঠিকানা না থাকায় মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম প্রথমে বাদ দেওয়া হলেও পরে তাকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছর নভেম্বরে হয় অভিযোগ গঠন।
৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন।
আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মুত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
তাতে আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়, মুফতি হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল থাকে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন হান্নান ও বিপুল। আর দেলোয়ারের পক্ষে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়েও ওই তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।