সিলেট সুরমা ডেস্ক :::: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোন দাবী পেশ করে তাদের লাভ হবে না। দাবী পেশ করে যদি দাবীর বাস্তবায়ন না হয় তাহলে পরাজিত হিসাবে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এটা কোন দলের জন্য শুভ নয়।
তোফায়েল আহমেদ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আব্দুর রাজ্জাক স্মৃতি পরিষদ ও ফাউন্ডেশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
স্মৃতি পরিষদ ও ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতিও বেসারিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টি (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, আ খ ম জাহাঙ্গীর এমপি, রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র নাহিম রাজ্জাক এমপি, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে। আশা করি নারায়নগঞ্জ নির্বাচনের পরে তারা আগামী সকল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। তাই বিএনপিকে বলবো বিভিন্ন দাবী না করে আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে প্রস্তুত করুন।
তিনি বলেন, নারায়নগঞ্জ নির্বাচনের সময়ে বিএনপির নেতারা সারাদিন সংবাদ সংম্মেলন করে বললেন নির্বাচন সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। যখন হেরে গেল তখন বলে কারচুপি হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে দেওলিয়া না হলে কি এই কথা বলতে পারে?
স্মরণ সভায় আব্দুর রাজ্জাকের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাজ্জাক ভাইয়ের কথা বলতে গেলে একদিনে শেষ করা যাবে না। রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকলেও রাজ্জাক ভাই ছিলেন সব দলের কাছে জনপ্রিয়। মৃত্যুর আগে আমি অসুস্থ রাজ্জাক ভাইকে লন্ডনে দেখতে যাই। আমার বিদায়ের সময় তিনি হাত ধরে বলেছিলেন, আচ্ছা তোফায়েল বল আমি কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে পারবো না। তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে এক চুলও বিচ্যুত হননি।
‘নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আছে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আজকে প্রমাণ হয়ে গেছে শেখ হাসিনা ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নারায়ণগঞ্জে একটা সফল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রমাণ হয়ে গেছে, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তুলেছে। আসলে বিএনপি নেতাদের মতিভ্রম ঘটেছে। না হলে এই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কি ভাবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের রায় বিএনপি একের এক বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। আসলে যে কোনো ভালো অর্জনকে বিতর্কিত করাই বিএনপির অভ্যাস। বাংলাদেশের সব ভালো অর্জনকে তারা বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। ২০১৯ সালেও শেখ হাসিনার অধীনে, পুনর্গঠিত নির্বাচনের কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান নাসিম।
রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অমানিসা নেমে আসে, তখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন আব্দুর রাজ্জাক।
ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসতে বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। বিএনপিকে বলি ভুল রাজনীতির পথ থেকে সরে আসুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে তাতে সহযোগিতা করুন। সকল ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করুন। সরকারকে সহযোগিতা করুন।