• ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ওসমানী বিমানবন্দর যেন সোনার খনি !

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬

# ক্রমাগত ধরা পড়ছে সোনার চালান
# আসে গুলি, হেরোইন, সিগারেটও
রফিকুল ইসলাম কামাল::::
১৬ নভেম্বর ২০১৬। সকাল সাড়ে ৬টায় আবুধাবি থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট এসে অবতরণ করে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চলে বিমানে তল্লাশি। পাওয়া যায় ৯ কেজি ৩শ’ গ্রাম ওজনের ৮০টি সোনার বার।
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০৫২ ফ্লাইট দুবাই থেকে আসে ওসমানী বিমানবন্দরে। এবারও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানে তল্লাশি চালায় কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দারা। এবার পাওয়া যায় এক কেজি ৮৭২ গ্রাম ওজনের ১৬টি সোনার বার।
এক মাসের ব্যবধানে ওসমানী বিমানবন্দরে ধরা পড়েছে প্রায় ১১ কেজি ওজনের এই ৯৬টি সোনার বার। শুধু এই দুই অবৈধ সোনার চালানই নয়, গত বেশ কিছুদিন ধরে ওসমানী বিমানবন্দরে একের পর এক অবৈধ সোনার চালান ধরা পড়ছে। শুধু ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সিলেটের এ বিমানবন্দরে ধরা পড়ে প্রায় ১৯ কেজি সোনা।
চলতি বছর আরও দুটি সোনার চালান ধরে পড়ে ওসমানী বিমানবন্দরে। গত ১৭ মার্চ বিকাল সাড়ে ৩টায় সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-১৩৬ থেকে ৫৮০ গ্রাম ওজনের ৫টি সোনার বার আটক করে কাস্টমস। সিলেটের গোলাপগঞ্জের সৌদি প্রবাসী আরজোমন আলীর ব্যাগ তল্লাশি করে ওই সোনা আটক করা হয়। পরে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ছাড়াও মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
গত ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-০১৮ আসে ওসমানী বিমানবন্দরে। সিলেট নগরীর তালতলা এলাকার বাসিন্দা মখমল হোসেনের ছেলে লোকমান হোসেনের ব্যাগ তল্লাশি করে ৪৩২ গ্রাম সোনা আটক করা হয়। মামলা ছাড়াও ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয় লোকমানকে।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামানের তথ্যানুসারে, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ওসমানী বিমানবন্দরে ধরা পড়ে প্রায় ১৯ কেজি সোনা।
ওসমানী বিমানবন্দরের কাস্টমস এবং শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বেশিরভাগ অবৈধ সোনার চালান আসে দুবাই, সৌদি আরব, আবুধাবিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। যুক্তরাজ্য থেকেও আসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ সোনা।
এ প্রসঙ্গে ওসমানী বিমানবন্দরের কাস্টমসের সহকারি কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সোনা বা যে কোনো অবৈধ জিনিস ধরতে কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দারা তৎপর। এই তৎপরতায় চলতি বছর বেশ কয়েকটি সোনার চালান ধরা পড়েছে ওসমানীতে।’
‘ওসমানী বিমানবন্দর কি সোনা চোরাচালানের ট্রানজিট রুট হয়ে ওঠছে’ এমন প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এমনটা মনে হয় না। মূলত ওসমানীতে যেসব চালান ধরা পড়ে, এগুলোর মূল গন্তব্য থাকে ঢাকা। কিন্তু আমাদের কাছে তথ্য থাকায় আমরা তল্লাশি চালিয়ে সোনার চালানগুলো আটক করি।’
শুধু সোনাই নয়, ওসমানী বিমানবন্দর ব্যবহার করে হেরোইন, সিগারেট, গুলিসহ বিভিন্ন জিনিস অবৈধভাবে আনা হয়। চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ৭৩৬ কার্টন সিগারেটসহ যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেলিম আহমদকে আটক করা হয়। পরে ৪ জুন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুস সবুরকে ১৫০ রাউন্ড গুলিসহ আটক করা হয়। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ পাকিস্তানের লাহোর থেকে আসা হেরোইনের প্রায় ৮ কেজি ওজনের একটি চালান আটক করে কাস্টমস। ২০১৫ সালের ২২ মার্চ প্রায় দুই কেজি ওজনের হেরোইনের আরেকটি চালান ধরা পড়ে ওসমানী বিমানবন্দরে।