রফিকুল ইসলাম কামাল
সিলেটে কলেজ শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের বিরুদ্ধে ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সিলেট সিলেট মূখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত টানা সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এর আগে আরো ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। আদালত আগামী ১৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য্য তারিখে খাদিজাকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে খাদিজার ওপর ক্ষুব্দ বদরুল এবার নিজেই নিজের ফাঁসি দাবি করেছে! তাকে আদালতের হাজিরের সময় সাংবাদিকদের দেখে ক্ষুব্দ থাকা বদরুল চিৎকার নিজের ফাঁসি দাবি করে।
আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় রোববার আদালতে ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। উল্লেখযোগ্য সাক্ষীরা হচ্ছেন খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া, মা মনোয়ারা বেগম, বদরুলের জবানবন্দি গ্রহণকারী বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা, ওসমানী হাসপাতালের ডাক্তার আতাউল গণি, শাহপরান থানার ওসি শাহজালাল মুন্সী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ, প্রত্যক্ষদর্র্শী তামান্না প্রমুখ। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর এ মামলায় ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছিলেন। আরো ১৫ জন মিলিয়ে এ মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হল।
তিনি আরো জানান, আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৫ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য্য করেছেন। ওইদিন স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক এবং স্বয়ং খাদিজাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ যখন বদরুলকে আদালতে হাজির করছিল, তখন সাংবাদিকদের দেখে বদরুল আলম চিৎকার করে খাদিজাকে নিয়ে বিষাদাগার করতে থাকেন। তিনি চিৎকার করে খাদিজাকে ‘প্রতারক, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক’ বলে অভিহিত করেন। বদরুল আলম বলেন ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘খাদিজার মতো মেয়ে হয় না, সে খুব ভালো!’ নিজের ফাঁসি দাবি করে ক্ষুব্দ বদরুল আলম বলেন, ‘খাদিজার জয় হোক, আমার ফাঁসি হোক’।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং ২৯ নভেম্বর বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে শাবি থেকে বদরুলকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয়।