স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে মিসবাহ আহমদ তাহা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামী কবির আহমদ। জবানবন্দীতে সে নিজ হাতে মিসবাহকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। পাশাপাশি তার তিন সহযোগীর নামও উল্লেখ করেছে। এদের মধ্যে রাতেই র্যাব-পুলিশের পৃথক অভিযান চালিয়ে কবিরের সহযোগী রুমেল ও রানা নামের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মূখ্য মহানগর আদালতে ধৃত কবির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা। পুলিশ কর্মকর্তা জেদান আরও জানান, ‘মিসবাহর সাথে কবিরের পূর্ব শত্রুতা ছিল। বেশ কিছুদিন আগে জিম সেন্টারে একবার তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। এর প্রতিশোধ নিতেই কুপিয়ে তাকে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে কবির। এছাড়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার সহযোগী হিসেবে রানা, রুমেল ও রাব্বি নামের তিনজনের কথাও উল্লেখ করেছে সে। এর আগে ঘটনাস্থলের একটি বিপণিবিতানের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজেও মিসবাহকে কোপানোর পর রক্ত মাখা চাপাতি মুছতে মুছতে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে কবিরকে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল সে। গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এদিকে, আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কবিরের সহযোগী হিসেবে রুমেলকে (২১) নগরীর বন্দরবাজারস্থ হাসান মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রুমেল সিলেট মহানগরের মোগলাবাজার এলাকার মাইজপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে এবং শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজারের মধুবন মার্কেটের সামন থেকে রানা আহমদকে গ্রেফতার করে র্যাব। সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী মডেল থানার সহকারি কমিশনার (এসি) নুরুল হুদা আশরাফী এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘কবিরের দেয়া স্বীকারোক্তির পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অপর পলাতক রাব্বিকে ধরতেও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর রাতে জিন্দাবাজারের কাস্টমস অফিসের সামনের রাস্তায় চাপাতি দিয়ে মিসবাহ উদ্দিন তাহাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের পরদিন তার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে কবিরের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজনকে আসামি করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মিসবাহ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও মা ও তিন বোনকে নিয়ে নগরীর মজুমদারি এলাকায় বসবাস করতেন। বাবা-মা’র চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিল সে। তার বাবা রহমত উল্লাহ জার্মান প্রবাসী। গত বছর সিলেট কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জার্মানি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মিসবাহ।