• ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বিদায় কমরেড

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ২৭, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক :::: কিউবার অবিসংবাদিত বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো আর নেই। রাজধানী হাভানার একটি হাসপাতালে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে তাঁর জীবনাবসান হয়। আগের রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর বর্ষীয়ান এই নেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কাস্ত্রোর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দেশটির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আবেলারদো কোলোমে ইর্বারা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কাস্ত্রোর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিউবার রাষ্ট্রীয় টিভির বরাত দিয়ে বিবিসি এখবর জানায়।
মাত্র দু’মাস আগে কিউবাবাসী কাস্ত্রোর ৯০ তম জন্মদিন উদযাপন করে। সেখানে এক অনুষ্ঠানে কাস্ত্রো তাঁর মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেন:  ‘‘আমি যে ৯০ বছরে পা দিতে পারবো তা স্বপ্নেও ভাবিনি।’’
৯০ বছর পর্যন্ত আয়ুলাভকে সেসময় তিনি ‘‘ স্রেফ প্রকৃতির খেয়াল’’ বলে অভিহিত করেন। স্বাস্থ্যগত কারণে ২০০৮ সালে ফিদেল কাস্ত্রো স্বেচ্ছায় কিউবার রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে দেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন তাঁরই সহোদর রাউল কাস্ত্রো।
এর আগে প্রায় অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে তিনি ক্ষমতাসীন ছিলেন। কিউবান বিপ্লবের প্রধান নেতা কাস্ত্রো ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৬  সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কিউবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দেবার আগ পর্যন্ত কিউবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তবে ১৯৬১ সালে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পার্টিপ্রধান ছিলেন।
হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষযয়ে পড়ার সময় ফিদেল কাস্ত্রোর রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয় মার্কিন মদদপুষ্ট স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ফালহেন্সিও বাতিস্তা সরকারের বিরোধিতার মধ্য দিয়ে। কাস্ত্রো তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ১৯৫৩ সালে মানকাদা ব্যারাকে ব্যর্থ হামলা চালিয়ে বন্দি ও কারারুদ্ধ হন। ছাড়া পেয়ে বাতিস্তা সরকারকে উৎখাতের জন্য সংগঠিত হওয়ার জন্য মেক্সিকো যান এবং সেখানে তাঁর ভাই রাউল কাস্ত্রো ও চে গে ভারাকে সঙ্গে নিয়ে ‘ ঃযব ২৬ঃয ড়ভ ঔঁষু গড়াবসবহঃ ’ নামের একটি বিপ্লবী দল গঠন করেন। এরপর কিউবায় ফিরে এসে সিয়েরা মায়েস্ত্রা থেকে শুরু করেন বাতিস্তা বাহিনির বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ। অবশেষে ১৯৫৯ সালে বাতিস্তা সরকারকে উখাত করতে সক্ষম হন এবং এক জননন্দিত বিপ্লবী সরকার গঠন করেন। কমিউনিস্ট আদর্শের কারণে যুক্তরাষ্ট্র কাস্ত্রো সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়। তবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবার পাশে দাঁড়ায় এবং এর প্রতিরক্ষার দায়িত্ব নেয়।
এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের চিরবৈরী এক রাষ্ট্রে পরিণত হয় কিউবা। মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে গত কয়েক দশক ধরে বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলা করে আসছে দেশটি।
একজন বিপ্লবী নেতা হিসেবে ফিদেল কাস্ত্রো শুধু স্বদেশেই নন, গোটা বিশ্বজুড়েই বিপুল জনপ্রিয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন কাস্ত্রো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ফিদেল কাস্ত্রো ছিলেন পরস্পরের বন্ধু ও অনুরাগী।