জকিগঞ্জ সংবাদদাতা
পহেলা নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে জেএসসি জেডিসি ফাইনাল পরিক্ষা। পরিক্ষা শুরু দিন থেকে জকিগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ ভোগান্তি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। ৩৩ কেভি লাইনে রক্ষণা বেক্ষণ কাজের অজুহাতে পহেলা নভেম্বর থেকে মাস ব্যাপী প্রতিদিন দুপুর ১ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকার ঘোষণা দিয়ে এখন ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার সময় বিদ্যুতের এমন আচরনে সকল মহলকে অতিষ্ট করে তুলেছে। শিক্ষক ও অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের ফলাফল নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। গত চারদিন থেকে জকিগঞ্জ উপজেলার একাধিক এলাকায় দিন রাতেও বিদ্যুতের দেখা মিলছে না। ফলে মানুষের দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ছোট বড় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। বিদ্যুতের কারণে অনেক এলাকার মসজিদের মাইকে আজান বন্ধ ও পানির অভাবে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে বিঘ্ন ঘটছে। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ব্যাংক, বীমা’সহ সরকারী অফিসের কার্যক্রম ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তা অচল।
প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় জন্ম মৃত্যুর নিবন্ধনকারীরা সনদ সংগ্রহ করতে গিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। জেলা শহর থেকে সবচেয়ে দূরবর্ত্বী উপজেলা জকিগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা দূর্ঘটনা ঘটলেও বিদ্যুতের কারণে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব হয়না। মোবাইল ফোনে চার্জের সমস্যায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রতি বছরই মাস ব্যাপী জকিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ৩৩ কেভি লাইনের মেরামত কাজের অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা করে। কিন্তু এরপরও সারাটি বছর বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমস্যা গ্রাহদের পিছু ছাড়েনা।
ভূক্তভোগীদের ধারণা ৩৩ কেভি লাইনের মেরামত কাজের নামে অসাদু কর্মকর্তারা অনিয়ম দূর্নীতি করে ফায়দা হাসিল করে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ যাওয়ার পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় জকিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইল নাম্বার।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এরপরও বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ কোন সায় দিচ্ছেনা। পৌরসভা ছাড়া রাতের বেলায় গোটা উপজেলা প্রায়ই অন্ধকারে থাকে। ফলে উপজেলায় চুরি ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন ঘোষণা ছাড়াই ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনাকে গ্রাহকরা সরকারের প্রতি জনগনের অনাস্থা প্রকাশে পায়তারার ষড়যন্ত্রের শামিল বলে অভিযোগ করেছেন। সীমান্ত অঞ্চল জকিগঞ্জে বিদ্যুৎ নিরবিচ্ছিন্ন না হলেও মাস শেষে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সহ সভাপতি বদরুল হক খসরু বলেন, পরিক্ষার সময় অন্তত বিদ্যুৎ বিভাগ সচেতন হওয়া দরকার ছিলো। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এবার জকিগঞ্জের হাজার হাজার জেএসসি ও জেডিসি পরিক্ষার্থীর ফলাফল খারাপ হতে পারে
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম ইসহাক আলীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুরাতন খাম্বা ও লাইন পরিবর্তনের কারণে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। তিনি আশাবাদী দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।