স্টাফ রিপোর্টার :
বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা যুক্তি সম্পাদক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে ফের পুনরায় তদন্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দিতে বলেছেন আদালত। অভিযোগপত্রে উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীসহ ১১জনকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়েছিল সিআইডি।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে সিলেটের তৃতীয় মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক হরিদাশ কুমার এই আদেশ দেন। এ প্রসঙ্গে আদালতের এপিপি খোকন কুমার দত্ত বলেন, “অভিযোগপত্রে ত্রুটি থাকায় আদালত শুনানি শেষে পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।” এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী গত ২৮ আগস্ট পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে এ অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখিতরা হলেন- সিলেটের কানাইঘাট থানার ফালজুড় গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে আবুল হোসেন ওরফে আবুল হোসাইন (২৫), খালপাড় তালবাড়ি গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার বীরেন্দ্র নগর বাগলী গ্রামের মো. আমির উদ্দিনের ছেলে হারুনুর রশিদ (২৫), কানাইঘাট থানার পূর্ব ফালজুড় গ্রামের হাফিজ মঈনউদ্দিনের ছেলে মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) এবং ফালজুড় গ্রামের জোয়ায়াদুর রহমানের ছেলে আবুল খায়ের রশিদ আহম্মদ (২৪)। এদের মধ্যে মান্নান ইয়াহইয়া ও আবুল খায়ের কারাগারে আছেন; বাকিরা পলাতক। এর বাইরে উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীসহ আরও ১১ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও ‘অপরাধে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায়’ অভিযোগপত্রে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালীশ্রী পাড়ার ফেরদৌস-উর-রহমানের ছেলে শফিউর রহমান ফারাবী (৩০); দৈনিক সবুজ সিলেটের আলোকচিত্রী মো. ইদ্রিছ আলী (২৪), কানাইঘাট থানার পূর্ব ফালজুড় গ্রামের হাফিজ মঈনউদ্দিনের ছেলে মোহাইমিন নোমান (১৯), লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার রমনপুর জমাদার বাড়ির মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাদেক আলী মিঠু (২৮), যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার এসএমএ করিম রোডের এ এফ রশিদুর রহমানের ছেলে মো. তৌহিদুর রহমান গামা (৫৯), ঢাকার মিরপুরের জব্বার মল্লিকের ছেলে আমিনুল মল্লিক (৩৫), যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ কাজলার মইনউদ্দিনের ছেলে জাকিরুল্লাহ হাসান (১৯), পল্লবীর বাউনিয়াবাদ কলোনী ব্লিডিংয়ের তাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আরফান মুসফিক (২০), বাগেরহাটের গোয়াখালি গ্রামের রেজাউল কবির বিশ্বাসের ছেলে জুলহাস বিশ্বাস (২৪), নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের ডা. আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে জাফরান হাসান (২০) এবং বরগুনার হেউলিবুনিয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে আবুল বাশার (৪০)। ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদ বাজারে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার পথে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অনন্ত বিজয় দাশকে। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন অনন্ত বিজয়ের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অনন্তকে খুন করেছে বলে সেখানে অভিযোগ করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের পর আনসার বাংলা-৮ নামের একটি সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। আর তদন্তের এক পর্যায়ে লেখক অভিজিৎ রায় হত্যায় গ্রেপ্তার কয়েকজনকে অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় দুই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একই দল রয়েছে। মামলার তদন্ত প্রথমে পুলিশ করলেও একপর্যায়ে তদন্তভার সিআইডি-র অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগকে দেওয়া হয়।