স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট সরকারী মহিলা কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টাকারী বদরুল আলমের শাস্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনের সময়ে সিলেটে ওই সন্ত্রাসীর ছবি দিয়ে প্রতীকী ডাস্টবিন বানিয়ে সেখানে থুথু ফেলে অভিনব এক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী ‘থুথু স্তম্ভ’ কর্মসূচীর আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশন (বামাসাক)। বদরুল আলম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র, এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। বামাসাক’র সভাপতি ফয়সল আহমদ বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য আহমেদ সেলিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আশরাফুল আলম নাসির। “পালাব না ঘটনা দেখে, কাউকে ফেলে যাব না বিপদে রেখে”- এ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বদরুলের ছবি সম্বলিত প্রতীকী দুটি ডাস্টবিন বানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আনা হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত সাধারণ লোকজন। অনেকেই থুথু দিয়ে ঘৃণা জানানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েন। এতে বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সিকান্দার আলী, সুজনের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবীর, প্রেসক্লাব ফাউন্ডেশনের সভাপতি আল আজাদ, সিসিক কাউন্সিলর রেবেকা বেগম রেনু, সিনিয়র সাংবাদিক মুকিত রহমানী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি ওয়েছ খছরু, রোটারেক্ট সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট হোসাইন আহমদ শিপন, (ইমজা) সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির (এসনিক) সাধারণ সম্পাদক জুরেজ আব্দুল্লা গুলজার, উইমেনস চেম্বারের সভাপতি মিনারা বেগম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা আলম এইম ইন লাইফের চেয়ারম্যান সৈয়দ খিজির হোসেন প্রমুখ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের লোকজন প্রতীকী ডাস্টবিনে থুথু ফেলে বদরুলের অপকর্মের ধিক্কার জানান।
এ সময় বক্তারা বলেন, বদরুল যে ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি প্রতিহত করা যেত যদি সে সময় সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার জন্য এগিয়ে যেত। বর্বর এ ঘটনা যাতে আর কোনদিন না ঘটে এবং এ ধরনের ঘটনা দেখে হাত পা না গুটিয়ে বসে না থেকে প্রতিরোধ এবং প্রতিহত করার আহবান জানানো হয়।
বক্তারা বলেন সমাজের অপরাধীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রতি হাজারে একজন অপরাধী। প্রতিবাদী কয়েকটি কণ্ঠ এগিয়ে আসলেই এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করা সম্ভব বলে জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা যার যার অবস্থান থেকে কোন ঘটনা দেখে পালিয়ে না গিয়ে প্রতিহত করারর চেষ্টা করার আহবান জানান। পাশাপাশি কোন ফাঁক ফোকর দিয়ে যাতে খাদিজা হত্যা প্রচেষ্টা মামলার আসামী বদরুল বোরোতে না পারে এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (ইমজা) সভাপতি মাহবুবুর রহমান রিপন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফয়সল আহমদ মুন্না, সমকাল সিলেট ব্যুরোর ফটো সাংবাদিক ইউসুফ আলী, বৈশাখী টিভির সিলেট প্রতিনিধি শাহাব উদ্দিন শিহাব, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সিলেট প্রতিনিধি গুলজার আহমেদ, ক্যামেরা পারসন শফি আহমদ, প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমন কুমার দাস, বাংলানিউজটুয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিলেট প্রতিনিধি কামকামুর রাজ্জাক রুনু, প্রথম আলো সিলেটের ফটো সাংবাদিক আনিস মাহমুদ, ফটো সাংবাদিক এইচএম শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ শরীফ গাজী, মোহনা টিভির ক্যামেরা পারসন মো. খছরুজামান, দি এইডেড হাই স্কুলের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও মো. সাইফুর রহমান, ফটো সাংবাদিক নুরুল ইসলাম, তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির শেলী চৌধুরী, মাইটিভির সিলেট প্রতিনিধি টুনু তালুকদার, ক্যামেরা পারসন শাহীন আহমদ, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ সিলেটের সহ সভাপতি এমরান আহমদ, সিলটিভির রির্পোটার হেনা মম, বাসিয়া টুয়েন্টিফোরের মিজান মোহাম্মদ, শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত অয়ন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর বিকেলে সিলেট এমসি কলেজ থেকে পরীক্ষা শেষে ফেরার সময় কলেজ ক্যাম্পাসে শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস।
তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে বদরুল আলম।