• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ভাষা মতিনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৮, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::::   আজ ৮ অক্টোবর, শনিবার। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা, আজীবন সংগ্রামী ভাষাসৈনিক আবদুল মতিনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সেনাপতি আবদুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আব্দুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন তাদের প্রথম সন্তান। জন্মের পর তার ডাক নাম ছিল গেদু।
১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলা আব্দুল মতিনের অন্যতম অবদান। সে বছর ২১ ফেব্রয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ছাত্রসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কলাভবনের ওই জনসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের। তারই নেতৃত্বে একুশে ফেব্রয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সারা বাংলার জন্য আন্দোলনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
ভাষা আন্দোলনের পর আব্দুল মতিন ছাত্র ইউনিয়ন গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং পরে সংগঠনটির সভাপতি হন। এরপর কমিউনিস্ট আন্দোলনে সক্রিয় হন। ১৯৫৪ সালে পাবনা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক হন তিনি। মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে আব্দুল মতিন ১৯৫৭ সালে তাতে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে তিনি পাবনা জেলাকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)-এর ভেতরে আলাউদ্দিন আহমদকে নিয়ে একটি দল গড়ে তোলেন। পরে তিনি দেবেন শিকদার, আবুল বাশার, আলাউদ্দিন আহমদ ও নুরুল হক চৌধুরীর সহায়তায় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। টিপু বিশ্বাস, আলাউদ্দিন আহমদ ও তার নেতৃত্বে পাবনা জেলার জনগণ মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। চীনকে অনুসরণকারী বামপন্থি দলগুলোর নানা বিভাজনের মধ্যেও আবদুল মতিন সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০০৬ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি ভাসানী সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিষদেরও প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখায় ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।
আব্দুল মতিন ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর সকাল ৯টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তোকাল করেন। এর আগে দীর্ঘদিন তিনি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি মরণোত্তর চক্ষু ও দেহদান করেন।
এদিকে ভাষাসৈনিক আবদুল মতিনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিনিটে নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ-এর উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন বিকেলে তোপখানাস্থ শিশু পরিষদ মিলনায়তনে ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদের উদ্যোগে চিত্র প্রদর্শনী ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।