স্টাফ রিপোর্টার :
কানাঘাটে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের দায়েরকৃত মামলায় ২ বখাটের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (সিনিয়র জেলাজজ) বিচারক বিমল চন্দ্র সিকদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে-সিলেটের কানাইঘাট থানার পূর্ব কুত্তরের মাটি গ্রামের মৃত জমিরুল হোসেনের পুত্র মিছবাহ উদ্দিন (৩৫) ও জকিগঞ্জ থানার চারিগ্রামের রইছ আলী পুত্র মখলিছুর রহমান (৪৫)। গতকাল রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামী মিছবাহ উদ্দিনের ভাই আব্দুল ওদুধ ও জইন উদ্দিনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার সার-সংক্ষেপ থেকে জানা গেছে, কানাইঘাট থানার পূর্ব কুত্তরের মাটির মৃত তছির আলী কন্যা রীনা বেগম স্থানীয় সড়কের বাজার হাই স্কুলে ৯ম শ্রেণীতে পড়া-লেখা করা সময় প্রতিদিন স্কুলে আসার পথে মিছবাহ উদ্দিন তাকে উত্যক্ত করতো। বাধ্য হয়ে একদিন বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় রীনা। এক পর্যায়ে তার পরিবার রীনা বেগমের পড়া-লেখা বন্ধ করে দেন। ১৯৯৯ সালের ৯ জুন রাত ৮ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে রীনা বেগম ঘর থেকে বাহিরে বের হন। ওইদিন পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা মিছবাহ উদ্দিনসহ তার লোকজন রীনা বেগমকে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে অপহরণ করে জকিগঞ্জ চারিগ্রামের মখলিছুর রহমানের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রীনা বেগমকে ৪ দিনে রেখে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় রীনা বেগম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে সিলেট আদালতে একটি নালিশী দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন। নং-২০৭ (১৫/০৬/১৯৯৯)। আদালত মামলাটি পর্যালোচনা করে ২০০০ সনের ১০ জানুয়ারী থেকে মিছবাহ উদ্দিন, তার ভাই আব্দুল ওদুধ মখলিছুর রহমান ও জইন উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানী ও ৫ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী মিছবাহ উদ্দিন ও মখলিছুর রহমানকে নারী ও শিশু নির্যাতন (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯৫ এর ৯ (গ) ১৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে উল্লেখিত দন্ডাদেশ এবং আব্দুল ওদুধ ও জইন উদ্দিনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি এডভোকেট মোঃ আব্দুল মালেক ও আসামীদেরপক্ষে এডভোকেট মোঃ হুমায়ুন কবির মামলাটি পরিচালনা করেন।