গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি ::::
সিলেটের গোয়াইনঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলার মামলায় দ্বিতীয় দফা সম্পূরক অভিযোগপত্র (চার্জশীট নং-২৫৩) আদালতে দাখিল করা হয়েছে। পুন:তদন্তের পর দাখিলকৃত চার্জশীটে ৫৬ জনকে আসামি দেখানো হয়েছে এবং অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দুজনকে। ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো অব পুলিশের (পিবিআই) পরিদর্শক দিলীপ কান্ত রায় অনেকটা গোপনে গত রোববার (২অক্টোবর) আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সিলেট আদালত পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মুকুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে দাখিল হওয়া চার্জশিটের বিষয়ে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন অবগত নয়। জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন বলেন, ঘটনাটি আমার সময়ে ঘটেনি। উপজেলা প্রশাসন বাদি হিসেবে চার্জশিটের বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার তরফ থেকে তাকে জানানো হয়নি। সম্পূরক অভিযোগে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলাটির সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইউনুস আলী গোয়াইনঘাট থানায় দায়েরকৃত মামলায় {নং-১০(১২) ১৪}আদালতে ১২১ নং অভিযোগত্র দাখিল করেন। তবে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ ব্যাতিরেকে ইচ্ছেমতো এজাহারনামীয় ২৫ আসামিকে বাদ দিয়ে সন্ধিগ্ধ ১৩ জনকে যুক্ত করে চার্জশিট দেন। কেন করেছেন তার ব্যাখ্যাও দেননি। নতুন চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন, গোয়াইনঘাট এলাকার বাসিন্দা আবুল মিয়া(৪৫), আব্দুল হাফিজ (৪৮), বাবুল বখত (৪৫), ইলিয়াস উদ্দিন লিপু (৪০), ইব্রাহিম মেম্বার (৪৫), নুরুল হক (৩০), খায়রুল ইসলাম (৩২), লিলু মিয়া (৩৫), রাজিব (৩২), রুবেল মিয়া (৩০), নজরুল ইসলাম (৩৮), আবুল কালাম (৩০), নজরুল ইসলাম (২২), বাবুল মিয়া (৩৫), শহিদ মিয়া (২৮), মুহিবুল হক মুহিব (৪৫), ইউনুস আলী (৪০), গিয়াস উদ্দিন (৩৫), আলাল মিয়া (৩০), আব্দুল মতিন (২৩), নাজিম উদ্দিন (৩০), রানা (২৮), সুমন (৩০), জাকির হোসেন (২৫), ইসমাইল হোসেন (৩২), আনোয়ার হোসেন (৩২), রবি খান (৩৫), মাসুক মিয়া (২২), সুলেমান খান (২৫), কুটিন মিয়া (৪০), শহিদ মিয়া (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৩২), সিরাজ মিয়া (৩৫), ইসমাইল (৩০), জসিম উদ্দিন (৪০), খোকন মিয়া (২৭), আলমাস উদ্দিন (২৯), কামাল উদ্দিন গাজী (৪৫), পলাশ মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩০), আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), ফারুক আহমদ বাবুল (৪৮), বিল্লাল (২৭), রুবেল (২৫), জয়নাল আবেদীন (২০), শহীদ মিয়া (৩৮), আলম ড্রাইভার (৩২), আব্দুল করিম (৩২), সাবু মিয়া (৪৫), মোস্তফা মিয়া (৩৬), উমর আলী (৩৪), তারেক মিয়া (২৮) আব্দুর রাজ্জাক (৩৪) আব্দুর রশিদ সাদ্দাম (৩২), বিল্লাল (৩২)।
২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর বেলা ১টায় হাইকোর্টের নির্দেশে জাফলংয়ে অবৈধ স্টোন ক্রাশার উচ্ছেদ অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম চৌধুরী। ওই সময় শতাধিক শ্রমিক ও মালিক ঐক্যবদ্ধ হয়ে অভিযান পরিচালনাকারী দলের ওপর হামলার পাশাপাশি গুঁড়িয়ে দেন প্রশাসনের গাড়ি। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় এসি (ল্যান্ড) এসএম ফেরদৌস বাদি হয়ে আবুল মিয়াসহ ৩৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩/৪শ’ লোকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অথচ মামলার চার্জশিট থেকে ঘটনার মূলহোতাসহ এজাহার নামীয় ২৬ আসামিকে বাদ দিয়ে অন্য ২৫ জনকে অভিযুক্ত দেখান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার এসআই ইউনুছ আলী। এ ঘটনায় তৎকালীন সময়ে আদালতে চার্জশীটের ওপর নারাজি দিলে মামলাটি বিশেষ কোনো সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পরে ওই মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই।