স্টাফ রিপোর্টার ::সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি কাজী বাড়ীর একটি পরিবার তাদের স্বজনদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছেন। নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও হামলার কারণে পরিবারটি অসহায়ত্বের মধ্যে আছে। নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিত পরিবারের সুলতানা বেগম। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বরইকান্দি কাজী বাড়ী নিবাসী শাহ আলম মাসুমের স্ত্রী সুলতানা এই দাবি জানান। নিজেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন দাবি করে লিখিত বক্তব্যে সুলতানা বলেন, দেয়ালে যখন পিঠ লেগে যায় তখন পর আপন বিচার করা সম্ভব হয় না। সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হয়। তখন সামনে আপনজন হলেও কিছু করার থাকেনা। আমাদের বেলায়ও তাই ঘটেছে। তিনি জানান, ৮ বছর আগে সম্পর্কের সূত্র ধরে তার ছোট বোন কাজী ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের আইন উল্লাহর ছেলে কবির উদ্দিন। এক সময় আমার পরিবার ওই বিয়ে মেনে নিলেও বেকে বসেন আত্মীয়-স্বজনরা। তারা বিয়ের পর থেকেই ইয়াসমিন ও তার স্বামীকে নানাভাবে হেনস্থা করে। বিশেষ করে ইয়াসমিন পিত্রালয়ে আসলে তাকে গালমন্দ শুনতে হয়। গত কয়েক বছর ধরে তিনি, তার বোন ও পরিবারকে নানাভাবে হয়রানী শুরু করেন আত্মীয়-স্বজনরা। বিভিন্ন সময়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো প্রতিকার হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে সুলতানা জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের বন্দি করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্ম দেন কাজী আফছর, কাজী ময়নুল ও কাজী ফয়েজ ও তাদের লোকজন। বিয়ের শত্রুতা ধরে পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করলে তিনি বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে তারা দা, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তাদের হামলায় সুলতানা, তার বোন কাজী ইয়াসমীন ও মা আনোয়ারা বেগম গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিবারকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু অভিযুক্ত কাউকে তাৎক্ষণিক আটক করেনি। এ ঘটনায় সুলতানা এজাহার দাখিল করলে প্রথমে মামলা নেয়নি দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে অবহিত করার পর ২৮ সেপ্টেম্বর মামলা রুজু করে পুলিশ। মামলা নং-১৭, তারিখ : ২৮-৯-২০১৬ইং। মামলায় একই বাড়ির আত্মীয় কাজী ময়নুল, কাজী ফয়েজ, কাজী আফছর, কাজী আবিদ, কাজী মুহিত, কাজী রোমান, কাজী আবুল ও লুৎফা বেগমকে আসামী করা হয়েছে। কিন্তু আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করছে না। সুলতানা জানান, এর আগেও তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে থানায় জিডি ও পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। বোন কাজি ইয়াসমিন ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বরে জীবনের নিরাপত্তা ও পাওনা টাকা উদ্ধারে পুলিশ কমিশনার বরাবরে অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি এলাকার লোকজন মিলে নিষ্পত্তি করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পর আবার তারা উৎপাত শুরু করে। বর্তমানে সে সহ ছোট বোনের স্বামী কবির উদ্দিন, বড় ভাই কাজী ডালিমকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করছে। যেকোনো সময় আসামীরা আবার হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানী করতে পারে। তিনি আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানান।