সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পতিতালয়ে আটকে রেখে গণধর্ষণের শিকার সেই এতিম কিশোরীকে ঘাগড়া গ্রামের চাচার বাড়ি থেকে শুক্রবার রাতে উদ্ধার করে থানা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সেই সাথে গ্রেফতার করা হয়েছে গণধর্ষণের মূল হোতা লম্পট ভগ্নিপতিকে। গ্রেফতারকৃতর নাম আলমাস মিয়া (৩৮)। সে উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের কুনাট গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে। উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাণিজ্যিক কেন্দ্রের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে হাওরের পতিতালয়ে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাতে।
সংশ্লিস্ট সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের একটি গ্রামের পিতৃহীন ১২ বছরের কিশোরীকে সোমবার তার চাচাত বোনের মাধ্যমে বেড়ানোর কথা বলে বাদাঘাটের কুনাট গ্রামে ভগ্নিপতি আলমাসের বাড়িতে নিয়ে আসে। রাতে আলমাস ওই কিশোরীকে নতুন জামাকাপড় কিনে দেয়ার কথা বলে গালর্স স্কুলের সামনের হাওরে থাকা নির্জন পতিতালয়ে কুনাট গ্রামের প্রয়াত ইউপি সদস্য বরজু মিয়ার ছেলে জসীম উদ্দিন ও রুপজীবিনী স্ত্রী বিলকিসের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিশোরীর দেয়া বক্তব্য অনুযায়ী রাতে ভগ্নিপতি আলমাস সহ ওই নির্জন বাড়িতে কমপক্ষ্যে ৬ জন তাকে ধর্ষণ করে। হত্যার হুমকি দিয়ে জোর পুর্বক বুধবার রাতেও আটকে রেখে দ্বিতীয় দফায় গণধর্ষণ করে তারা। বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ওই পতিতালয় থেকে পালিয়ে কিশোরী পার্শ্ববর্তী ঘাগড়া গ্রামে তার এক চাচার বাড়িতে গিয়ে শুক্রবার স্বজনদের কাছে গণধর্ষণের কথা কিশোরীর স্বজনরা বিষয়টি পুলিশকে জানাতে সাংবাদিকদের ফোন করে অনুরোধ করেন। এদিকে ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও শুক্রবার পর্য্যন্ত ভোক্তভোগীকে গ্রাম্য সালিশের নামে আটকে রেখে চিকিৎসা সেবা ও আইনি সহযোগীতা নিতে দিচ্ছিল না অভিযুক্তরা। থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি শুক্রবার দুপুরে বললেন, ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে ২৪ ঘন্টার ভেতর কিশোরীকে উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা ও আইনি সহায়তা দেয়া হবে। এরপরই পুলিশ বিষয়টির অনুসন্ধানে নেমে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়। উদ্ধার ও লম্পট ভগ্নিপতিতে গ্রেফতার করতে সক্ষম। ভিকটিমকে থানায় নেয়ার পর ভিকটিমের লোমহর্ষক বর্ণণা অনুযায়ী পুলিশের কোন কোন সদস্য নিজের অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। এতিম কিশোরীকে গণধর্ষণের বিষয়টি জেলা ও উপজেলার সুশীল সমাজ সহ সর্বস্থরের মানুষের বিবেককে ক্ষত করেছে।
এ ব্যাপারে শুক্রবার মধ্যরাত অপহরণ ও ধর্ষণ করার অভিযোগে আলমাস, পতিতালয়ের পরিচালক , তার মক্ষিরাণী স্ত্রী সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৫ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দাযের করা হয়েছে। থানার ওসি মো. শহীদুল্লাহ তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বললেন, বিষয়টি বরই মর্মান্তিক, ঘৃণ্য পশুর কাজকেও হার মানিয়েছে, অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনা হবে, এ ঘটনায় আর কে কে জড়িত ছিল তাদেরকে খুজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।