সিলেট জেলা স্টেডিয়াম থেকে : সব ছিল এই ম্যাচে। দর্শক, গোল, উত্তেজনা তো ছিলই; সাথে ‘বোনাস’ হিসেবে ছিল মারামারি! আর আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা তো ছিল লাগামহীন!
সিলেট দ্বিতীয় বিভাগীয় কমিশনার গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের এরকম ফাইনালে সুনামগঞ্জকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের বরমাল্য পড়েছে নরসিংদী। ৩-১ গোলে জয়ী হওয়া ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন নরসিংদীর ১২ নং জার্সিধারী ফরোয়ার্ড।
১২ নং জার্সিধারীর নাম না দেখে পাঠকদের খটকা লাগতেই পারে। কিন্তু সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে বসে ফাইনাল ম্যাচ কাভার করা সাংবাদিকরা এক্ষেত্রে অসহায়! আয়োজকদের বার বার বলার পরও যে মিলেনি খেলোয়াড়দের তালিকা! বাধ্য হয়ে তাই জার্সি নম্বরের উপরই ভরসা করতে হলো।
শুধু এখানেই থেমে থাকেনি আয়োজকদের ব্যর্থতা। প্রেসবক্স শুধুমাত্র সাংবাদিকদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু সেই প্রেসবক্স ম্যাচ শুরুর আগেই বহিরাগতদের দখলে! প্রেসবক্সে প্রবেশ করে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো তাই সাংবাদিকদের। পরবর্তীতে আয়োজকদের ডেকে এনে যদিওবা বসার জায়গা মিললো, কিন্তু বহিরাগতদের আনাগোনা আর বন্ধ হলো না।
নির্ধারিত সময়ে ১৮ মিনিট পরে শুরু হলো ম্যাচ। স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে থাকা প্রায় ২০ হাজার দর্শক নড়েচড়ে বসার আগেই গোল খেয়ে বসে সুনামগঞ্জ। ডিবক্সের জটলায় বল পেয়ে সুনামগঞ্জকে স্তব্দ করে দেন নরসিংদীর ১২ নং জার্সিধারী ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের ৩২ মিনিটে ফের গোল। সমতা নয়, নরসিংদীর আরো এগিয়ে যাওয়া! গোলদাতা সেই ১২ নং জার্সিধারী। দ্বিতীয়ার্ধের ৪২ মিনিটে আরেক গোল করে হ্যাটট্রিক করেছেন নরসিংদীর এই ফরোয়ার্ড।
সুনামগঞ্জের একমাত্র গোলটি এসেছে ঠিক পরের মিনিটে, ১৬ নং জার্সিধারী ফরোয়ার্ডের পা থেকে।
সুনামগঞ্জ গোল পেতে পারতো আরো। ম্যাচের ৯, ১৮, ২৯, ৩৪, ৪১ মিনিটে গোল করার অনায়াস সুযোগ নষ্ট করেছেন সুনামগঞ্জের ফরোয়ার্ডরা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে নরসিংদীর গোলমুখে একের পর এক আক্রমণ শানিত করেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোল পায়নি সুনামগঞ্জ।
শুধু আজকের ম্যাচই নয়, পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছেন নরসিংদীর অধিনায়ক। কিন্তু আজ ম্যাচের শেষার্ধে দুর্দান্ত গতির এই ফুটবলার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেন। সুনামগঞ্জের ডাগআউটের এক ফুটবলারকে অযথাই পা দিয়ে মেরে বসলেন। এরপর লঙ্কাকা- বেধে গেল স্টেডিয়ামে। সুনামগঞ্জের ডাগআউট রণহুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে গেল নরসিংদীর ডাগআউটের দিকে। নরসিংদীর অধিনায়ককে রেফারির লাল কার্ড আর আয়োজক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ঠান্ডা হলো পরিস্থিতি। এরপর বল মাঠে গড়াতে না গড়াতেই রেফারির শেষ বাঁশি।