সিলেট সুরমা ডেস্ক:::::::::::ফুটবলে প্রচলনটা অনেক বেশি। অনেক ক্লাবই তাদের স্টেডিয়ামকে পুঁজি করে আয় করে প্রচুর অর্থ। জনপ্রিয় ক্লাব বার্সেলোনার হোম ভেন্যু ক্যাম্প ঘুরে দেখতে খরচ করতে হয় ২৫ ইউরো। রিয়াল মাদ্রিদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যু দেখতে লাগে ১৮-২০ ইউরো। ক্রিকেটে এমন রীতি না থাকলেও অনেক দেশই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য কাজে লাগিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে মানুষদেরকে আকৃষ্ট করছে।
এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হতে পারে অন্যতম। তাদের ক্রিকেট ভেন্যু বাবার্ডোজ, জ্যামাইকা, সেন্ট ভিনসেন্ট বা গায়ানার স্টেডিয়ামগুলো দাঁড়িয়ে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝটায়। কোনোটি সাগর পাড়ে আবার কোনোটির চার পাশে দাঁড়িয়ে অনেক পাহাড়। ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালার স্টেডিয়ামটিও হতে পারে উদাহরণ।
তবে উদাহরণ খুঁজতে দেশের বাইরে না গেলেও চলবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ৪৮ একরের উপর নির্মিত এই স্টেডিয়ামের পাশেই সুবিস্তৃত সৈকত। প্রথমে চোখ বুলালে অবশ্য সারিসারি ঝাউবনই চোখে পড়বে। ঝাউবন পেরিয়েই সৈকত। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ হলে এই ক্রিকেট স্টেডিয়ামটিও হতে পারে পর্যটকদের কাছে উদাহরণের ভেন্যু।
সাগরপাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই স্টেডিয়াম নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি) বড় পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা থেকে শুরু করে সৌন্দর্য বর্ধনের সব ধরণের পরিকল্পনা নেয়া আছে বিসিবির। অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশ ভালোভাবে নজর আছে তাদের। সবকিছুর জন্য ১৪০ কোটি টাকার বাজেট পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিসিবি।
মিডিয়া সেন্টার, ডরমেটরি, অ্যাকাডেমি ভবন, জিম, সুইমিংপুল নির্মাণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে ১৪০ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিকল্পনা দিয়েছে বিসিবি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদনের পর প্রকল্পটি পেয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন। অপেক্ষা এখন একনেকে’র অনুমোদনের।
সেটা হয়ে গেলেই শুরু হয়ে যাবে কাজ। আর অনুমোদনের দুই বছরের মধ্যেই এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা যাবে। স্টেডিয়ামের কাজ শুরুর জন্য ১৪০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।’
কক্সবাজার স্টেডিয়ামের কমপ্লেক্সের দুই পাশে দুটি পুকুর আছে। এর একটি কিছুদিন পরই সুইমিং পুলে পরিণত হবে। অন্যটির অবকাঠামো সুবিধা দিয়ে সাধারণ দর্শকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। ম্যাচ চলাকালে সেখানে ছোট ছোট নৌকা রাখা হবে। পুকুরের চারপাশের সৌন্দর্য্য বাড়াতে ৪০০ নারিকেল গাছের চারা ইতিমধ্যেই লাগানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হলেও যুব বিশ্বকাপের ১৯টি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলেছেন ১৬টি দেশের ক্রিকেটাররা। এমন মাঠ দেখে সব দেশই প্রশংসা করে গেছেন। এমনই জানিয়েছেন ভেন্যু ম্যানেজার আহসানুল হক বাহার ‘সব দেশই ভেন্যুটি পছন্দ করেছে। সবাই খুব প্রশংসা করে গেছে। কাজ করা হলে সব দেশই এখানে এসে খেলতে চাইবে।’
পাশে লম্বা সমুদ্র সৈকত। আছে সুবিন্যস্ত ঝাউবন। সমুদ্রের গর্জন আর সবুজের সমারোহে ক্রিকেটটাও এখানে বেশ জমবে এমনই বিশ্বাস সবার। সাথে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের দাবিও জানিয়ে রাখছেন এখানকার ক্রিকেটপাগল মানুষেরা। রেহান নামের এক যুবক বলছেন, ‘গ্যালারি বাড়িয়ে এবং স্টেটিয়ামটি বিশ্বমানের করে এখানে বাংলাদেশের ম্যাচ দিলে খুব ভালো হবে। এখানে আসা পর্যটটকদেরও ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট করা যাবে।’